Header Ads

কিয়ামত দিবসের ব্যাপারে ভ্রান্ত আক্বীদা ভ্রান্ত আক্বীদা-২৫: অনেক মূর্খ লোক বিভিন্ন ভণ্ড পীর ও খাজা বাবাদের প্রতি এরূপ বিশ্বাস রাখে যে, তারা কবরে, হাশরে, পুলসিরাতে যত রকম সমস্যা আছে, সব সমস্যা থেকে মুরীদদেরকে পার করে নিয়ে যাবেন এবং নিশ্চিতভাবে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে সুপারিশ করে তাদেরকে বেহেশতে নিবেন। তাদের বাবারাও বলে থাকেন যে, আমার কোন মুরীদকে পুলসিরাতে রেখে আমি বেহেশতে প্রবেশ করবো না। এসব আক্বীদা পোষণ করা এবং এরূপ দাবী কুফরী কাজ। কোন মানুষ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না, সে জান্নাতী। স্বয়ং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, খোদার কসম! আমি জানি না যে, আমার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার কী ফায়সালা? অথচ আমি আল্লাহর রাসূল। [সূত্র: বুখারী শরীফ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা -১৬৬।] এ কারণে কেউ নিজের সম্পর্কে জান্নাতী হওয়ার দাবী করতে পারে না। হ্যাঁ, এ ব্যাপারে আশা পোষণ করা যায়। কাজেই আল্লাহর হুকুমের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা উচিত এবং বেহেশতের আশা রাখা উচিত। তেমনিভাবে অন্যের সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা তো শরী‘আতের নির্দেশ, কিন্তু এমন বিশ্বাস রাখা বা দাবি করা নিষেধ যে, অমুক ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে আল্লাহর ওলী বা জান্নাতী। তবে যাদের জান্নাতী হওয়ার ব্যাপারে কুরআনে-হাদীসে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে, তাদেরকে জান্নাতী হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, কেউ যদি সত্যিকার অর্থে বুযুর্গ বা আল্লাহর ওলী হয়ে যান, তাহলে তাদেরকে হাশরের ময়দানে আল্লাহ তা‘আলা সুপারিশ করার অনুমতি দিলে, তারা লোকদের জন্যে সুপারিশ করতে পারবেন। তবে কেউ নিজের পক্ষে এরূপ দুঃসাহস দেখাতে পারবে না। কেননা, যাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলা খুশি হয়ে আল্লাহ তা‘আলা সুপারিশ করার অনুমতি দিবেন, কেবলমাত্র তারাই সুপারিশ করতে পারবেন। আর সেটা এমন হবে, যেমন দুনিয়াতে একজন সাধারণ মানুষ বাদশাহের দরবারে সুপারিশ করেন। বাদশাহ এ সুপারিশ কবুল করতেও পারেন, নাও করতে পারেন। সুতরাং কেউ তার মুরীদকে সুপারিশ করে নিশ্চিতভাবে বেহেশতে নিয়েই যাবে-এরূপ ধারণা সম্পূর্ণ শরী‘আতবিরোধী। ভ্রান্ত আক্বীদা-২৬: অনেকে নিজের বুযুর্গী জাহির করার জন্যে দাবি করে থাকে যে, তারা দুনিয়াতে জাগ্রত অবস্থায় চর্মচক্ষু দ্বারা আল্লাহ তা‘আলাকে দেখে থাকে। আবার অনেক প্রতারক ভণ্ড লোকদের জিজ্ঞেস করে যে, তুমি ৭০/৮০ বছর যাবৎ আল্লাহ তা‘আলার বন্দেগী করছ, কতবার আল্লাহকে দেখেছ? উত্তরে সেই ব্যক্তি যদি বলে, আমি একবারও তো আল্লাহকে দেখতে পাইনি, তখন বলা হয় যে, তাহলে তো তোমার ইবাদত-বন্দেগী কিছুই হলো না। তুমি যদি সঠিকভাবে নামায পড়তে, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহর দীদার লাভে ধন্য হতে। লোকদের এরূপ আক্বীদাও কুফরী। কতিপয় ভন্ডপীর ও খাজাবাবারা লোকদের সহজে নিজের দলে ভিড়ানোর জন্যে এরূপ ফন্দি করে থাকে। আল্লাহ তা’আলা কুরআনে কারীমে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন যে, “দুনিয়াতে কোন চর্মচক্ষু আল্লাহকে দেখতে পারে না।” [সূত্র: সূরা আনআম, আয়াত, ১০৪।] হযরত মূসা আ. আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসার আবেগে বিহ্বল হয়ে যখন তাঁর দীদার প্রার্থনা করলেন, তখন জবাবে ইরশাদ হলো “হে মূসা! কস্মিনকালেও দুনিয়াতে চর্মচক্ষু দ্বারা আমাকে দেখতে পারবে না।” [সূত্র: সূরা আরাফ, আয়াত ১৪২।] হাদীসে শরীফে এসেছে যে, “জেনে নাও। তোমরা কখনো চর্মচক্ষু দ্বারা আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পারবে না। হ্যাঁ, মৃত্যুর পর মু‘মিনরা হাশরের ময়দানে এবং বেহেশতের মধ্যে বেহেশতী চক্ষু দ্বারা আল্লাহকে দেখতে পারবে। বরং জান্নাতের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হবে, আল্লাহ তা‘আলার দীদার বা দর্শন লাভ। [সূত্র : মুসলিম শরীফ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা -১০০।] মু‘মিনরা দুনিয়াতে চর্মচক্ষু দ্বারা আল্লাহকে দেখতে পারবে না-এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা। বাস্তবিকপক্ষে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন-এর হিজাব বা পর্দা এমন নূরের, যা আমাদের কল্পনার বহির্ভূত। সে নূরকে কোন চর্মচক্ষু বরদাশতও করতে পারবে না। অথচ সেই সূর্যের দিকে চর্মচক্ষু দ্বারা তাকানোই যখন অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার, তাহলে আল্লাহ তা’আল্লাকে দুনিয়াতে কিভাবে দেখা সম্ভব? তবে বেহেশতের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা বিশেষ শক্তির অধিকারী করে জান্নাতীদের তৈরী করবেন। তখন তাদের মাঝে আল্লাহর দর্শন লাভের ক্ষমতা দান করা হবে। সুতরাং, তখন তারা উক্ত নেয়ামত লাভে ধন্য হতে পারবেন। অবশ্য দুনিয়াতে স্বপ্নের মধ্যে কেউ আল্লাহকে কোন আকৃতিতে দেখতে পারে, বা খাবের মত অবস্থা যাকে ‘ইসতিগরাকী কাইফিয়াত’ বলা হয়, সে অবস্থায়ও কেউ কেউ আল্লাহকে অন্তরচক্ষু দ্বারা মুশাহাদা করতে পারে, সেটা সম্ভব। যেটা সম্ভব নয়, তা হলো জাগ্রত অবস্থায় চর্মচক্ষু দ্বারা আল্লাহকে দেখা। সুতরাং কেউ যদি এরূপ দাবি করে, তাহলে তাকে মিথ্যুক, গোমরাহ ও কুফরী আক্বীদাওয়ালা বলা হবে। তার থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব । https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islami_jindegi
Blogger দ্বারা পরিচালিত.