Header Ads

আজকে নব্য মুরজিয়াদের লক্ষ করে কিছু কথা বলবো...!!!


প্রিয় ভাই ও বোনেরা! আজকে নব্য মুরজিয়াদের লক্ষ করে কিছু কথা বলবো। আপনারা যে যেখানে অবস্থান করছেন, আপনাদের আশেপাশে যদি এমন কোন মুরজিয়া ব্যক্তি থাকে তাহলে তার কাছে আমার এই বার্তা, আমার এই চিঠিটি অবশ্যই পৌছে দিবেনঃ
...
হে তাগুত শাসকের পদলোহন কারী মুরজিয়া ওলামাগন! সত্য করে বলুনতো, আপনাদের জীবনের লক্ষ ও উদ্দেশ্য কি? আপনারা কোন লক্ষকে সামনে রেখে কাজ করছেন? বছরের পর বছর ধরে আপনারা মুসলিম উম্মাহকে কি উপহার দিচ্ছেন?


আপনারা উপহার দিচ্ছেন এর বাস্তবতা হচ্ছে, আপনারা মুসলিম উম্মার মাঝে এমন একটি কাপুরুষ প্রজন্ম গড়ে তুলেছেন, যেই প্রজন্ম অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে না। আপনারা দুর্বল ও পরাজিত মানসিকতার এমন একটি জেনারেশন গড়ে তুলেছেন, যাদের চোখের সমানে একের পর এক মুসলিম ভূমি গুলোকে কাফিররা দখল করে নিচ্ছে, হাজার হাজার মুসলিম নারী, শিশুকে কাফিররা নির্বিচারে হত্যা করছে অথচ তাদের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। এমন একটি জেনারেশন যাদের চোখের সামনে আল্লাহর আইনকে পরিবর্তন করা হচ্ছে, আল্লাহর বিধানকে বাদ দিয়ে মানব রচিত কুফরী সংবিধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে অথচ এই বিষয় গুলোকে তারা একেবারেই সাধারন ভাবে দেখছে। এগুলোকে তারা কোন অন্যায় মনে করছে না। 

আপনারা এমন একটি ভীতু প্রজন্ম গড়ে তুলেছেন, যারা "আমর বিল মারুফ ওয়া নেহি আনীল মুনকার" করতে জানে না, যারা সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতে জানে না। যাদেরকে আপনারা শিখিয়েছেন, তুমি তোমার নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকো, উম্মার কোথায় কি হল এই বিষয়ে তোমার মাথা ঘামানোর দরকার নেই! উম্মার পরিবর্তনের বিষয়ে তোমার কোন চিন্তা ভাবনার দারকার নেই!
আপনারা এমন এক কাপুরুষ প্রজন্ম গড়ে তুলেছেন, যারা জালিমের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ভয় পায়। আপনারা এমন এক আজিব প্রজন্ম গড়ে তুলেছেন, যারা নিজেদের মুসলিম দাবী করে অথচ অন্তরে ধর্ম-নিরপেক্ষতার প্রতি ভালবাসা রাখে!

হে মুরজিয়া ওলামাগন! আপনারা সমাজে ইরজার বীজ বপন করেছেন। আপনারা মুরজিয়া আকীদার প্রচার-প্রসার ঘটাচ্ছেন। আপনারা ভ্রান্ত এই ইরজা আকিদার মাধ্যমে উম্মার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতিবাদী মানসিকতাকে নষ্ট করে দিচ্ছেন। আজকে আপনাদের মত উদ্ভ্রান্ত মুরজিয়া দ্বায়ীদের কারনেই মুসলিম যুবকদের মধ্য থেকে আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের মত জিহাদ বিরোধী মুনাফিক তৈরী হচ্ছে। কিন্তু কোন সাহসী খালিদ বিন ওয়ালিদ, মিহাম্মাদ বিন কাসেম, সালাউদ্দিন আইয়ুবী তৈরী হচ্ছে না। 

আজকের এই পরাজিত মানসিকতার মুরজিয়া প্রজন্ম, যদেরকে আপনারা দিনের পর দিন মেহনত করে গড়ে তুলেছেন, এদের দ্বারা কি লাভ হচ্ছে? আপনারা এদের কোন তাওহীদের শিক্ষা দিচ্ছেন? আপনারা এদের কোন আকিদা শেখাচ্ছেন? আপনাদের আকিদার মাঝে কি তাওহীদুল হাকীকী আছে? আপনারা কি বিশ্বাস রাখেন, বিধান দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর! আপনাদের আকিদার শিক্ষার মাঝে কি নাওয়া কাদুল ঈমান তথা ঈমান ভঙ্গের কারন গুলো আছে? আপনাদের আকিদার মাঝে কি আল-ওয়ালা ওয়াল-বারার কোন প্রভাব আছে?

না..। আপনাদের আকিদার মাঝে এগুলোর কোন কিছুই নেই। বরং আপনাদের আকিদার মাঝে আমেরিকা ইসরাইলের গোলাম মুহাম্মাদ বিন সালমানের মত নিকৃষ্ট মুরতাদ শাসকের চাটুকারিতা করার বিধান আছে! আপনারা হচ্ছেন তারা, যারা সৌদির রাজার পা-চাটা গোলাম। আপনারা হচ্ছেন তারা, যারা নির্লজ্জের মত মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে বলেন, ট্রাম্প ও সৌদি রাজা মিলে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে! 

জাজিরাতুল আরবের পবিত্র ভূমিতে সিনেমা হল নির্মান করছে, ফ্যাশন-সো এর আয়োজন করেছে, দুদিন পর পতিতালয়ও বানাবে! কৈ, আপনারাতো মুহাম্মাদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কোন ধরনের প্রতিবাদ করলেন না? কি ভাবে করবেন? তাদের দেওয়া রিয়াল আর ডলার দিয়েই তো আপনাদের পেট চলে! হক কথা বলে চাকরী থাকবে না! 

আপনাদের ইসলাম আজ শুধুমাত্র ব্যক্তি জিবনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। দাড়ি, পাঞ্জাবী, মিছওয়াক আর মিষ্টি খাওয়া, এটাই আপনাদের দ্বীন!

আমি এসব সুন্নাহকে ছোট করছি না বরং আপনাদের দ্বীন পালনের বাস্তবতাকে তুলে ধরেছি।
আপনারা আজ যে ইসলাম পালন করছেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে এমন অসম্পূর্ণ ইসলাম রেখে যান নি। বরং তিনি আমাদের মাঝে এমন একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যাবস্থা রেখে গেছেন, যেখানে ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রিয় জীবন সব কিছুই আছে। অথচ আপনাদের ইসলাম শুধুমাত্র ব্যক্তি জীবনের কিছু আচার-অনুষ্ঠানের মাঝেই সীমাবদ্ধ। আপনাদের তাওহীদ হচ্ছে শুধুমাত্র কবর আর মাজারের বিরোধীতার মাঝেই সীমাবদ্ধ। শাসক আল্লাহর আইন পরিবর্তন করছে, এ বিষয়ে আপনাদের কোন মন্তব্য নেই। শাসক আমেরিকা, ইসরাইলের গোলামী করছে, এ বিষয়ে আপনাদের কোন বক্তব্য নেই! 

অথচ এই অসম্পূর্ণ দ্বীন পালন করে আপনারা নিজেদের সালাফী দাবী করেন! আপনারা সালাফী না, আপানারা হচ্ছেন নব্য মুরজিয়া। কারন, সালাফী হতে হলে পরিপূর্ণ ভাবে সালফদের অনুসরণ করতে হয়। আর আমাদের সন্মানীত সালাফগন আপনাদের মত চাটুকার ছিলেন না।

আব্দুল্লাহ্ ইবনুল মুবারক, সুফীয়ান সাওরী, ইমাম আহমদ বিন হাম্বাল, ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ. এদের জীবনী গুলো আরো ভাল করে পড়ুন। তাহলে বুঝতে পারবেন, তারা আপনাদের মত রিয়াল খোর মাদখালী ছিলেন না, আপনাদের মত তাগুত শাসকদের চাটুকারিতা করতেন না। বরং তাঁরা জালিম শাসকের সামনে দাড়িয়ে তাদের চেখে চোখ রেখে সত্য বলতেন। বুক উচু করে হক কথাকে স্পষ্ট ভাষায় শাসকের সামনে প্রকাশ করে দিতেন। এটাই ছিল আমাদের সালাফদের নীতি।
আপনারা যেই মানহাজের উপর আছেন, এটা আহালুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়ার মানহাজ না। এটা মুরজিয়াদের মানহাজ, এটা ওলামা উস সালাতীন তথা দরবারী মোল্লাদের মানহাজ! শাসকদের মসনদ টিকিয়ে রাখতে আর কতকাল মুসলিম তরুনদের বিভ্রান্ত করবেন? আর কতকাল সত্যকে গোপান করে শাসকের তাঁবেদারি করবেন?

হে দরবারী ওলামাগন! পরিশেষে জিজ্ঞেস করতে চাই, এখনও কি সময় হয়নি সত্যকে স্পষ্ট রুপে বর্ননা করার? এখনও কি সময় হয়নি এ সকল তাগুত শাসকদের তাঁবেদারি বাদ দিয়ে আল্লাহর আনুগত্যের দিকে ফিরে আসার?

এখনো সময় আছে। ফিরে আসুন আল্লাাহর দিকে। ফিরে আসুন আপনার রবের দিকে। ফিরে আসুন আপনার দ্বীনের দিকে........

-শায়েখ তামীম আল আদনানী হাফিঃ।
:
Blogger দ্বারা পরিচালিত.