Header Ads

ঈমান ও আক্বীদাহ...!!!

باسمه تعالى 

ঈমান ও আক্বীদাহ


ভূমিকাঃ ঈমান অতি মূল্যবান একটি জিনিস। ঈমানকে পাকা-পোক্তা করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যই জরুরী। কারণ ঈমান ঠিক না করে সারা জীবন নেক আমাল করলেও আখিরাতে কোন লাভ হবে না। সহীহ ঈমানের সাথে আমল দুনিয়া ও আখিরাতে ফায়দা পৌছায়। আর আমল ব্যতীত শুধু ঈমানও ফায়দা দেয়। কারণ, এমন ঈমানদার, যার কোন নেক আমল নেই, সেও কোন এক সময় জান্নাতে প্রবেশ করবে। কিন্তু ঈমান ব্যতীত শুধু নেক আমল দুনিয়াতে কিছু ফায়দা পৌছালেও (যেমন: তার সুনাম হয় বা ব্যবসা বৃদ্ধি পায়, স্বাস্থ্য ভালো থাকে ইত্যাদি, কিন্তু) আখিরাতে ঈমান ব্যতীত শুধু নেক আমল কোনই কাজে আসবে না। ঈমান-আক্বীদার বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানা থাকা জরুরী। যাতে ফিতনা ফাসাদের যুগে ঈমান রক্ষা করা সহজ হয়। হাদীস শরীফে আছে, ফিতনার যামানায় অনেক মানুষ সকালে মুমিন থাকবে, বিকালে কাফির হয়ে যাবে। (তিরমিযী শরীফ হা: নং ২২২, মুসলিম শরীফ হা: নং ১১৮)

অর্থাৎ, লোকের ইলমে দীন শিখবে না, হক্কানী উলামায়ে কেরামের সাথে সম্পর্ক রাখবে না, অপরদিকে বদদীনীর সয়লাব ব্যাপক হয়ে যাবে। এমনকি দীনের নামে কুফর ও শিরকের প্রচার করা হবে, তখন মানুষ না বুঝে কুফরকে দীন মনে করে গ্রহণ করে কাফের হয়ে যাবে। এজন্য নিম্নে ঈমান সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো, যাতে আমরা সে অনুযায়ী ঈমানকে দৃঢ়-মজবুত করতঃ ফিতনা-ফাসাদ থেকে বেঁচে থাকতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন- (তরজমা) রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমান আনয়ন করেছেন ঐ সকল বস্তু সম্পর্কে যা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর নবীগণের প্রতি। তাঁরা বলেন, আমরা তাঁর নবীগণের মাঝে কোন পার্থক্য করি না এবং তাঁরা আরো বলেন, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাই, ওহে আমাদের পালনকর্তা। আমরা সকলেই আপনার নিকট প্রত্যাবর্তনকারী। (সূরা বাকারা, আয়াত:২৮৫) “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাগনের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের উপরে এবং তাঁর রসূলগনের উপর ও কিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে”। (সূরা নিসা, আয়াত:১৩৬) হাদীসে জিবরাঈলে উল্লেখ আছে, হযরত জিবরাঈল আ. আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ছদ্মবেশে এসে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন ঈমান কাকে বলে? জবাবে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ঈমানের হাকীকত হলো, তুমি মনে-প্রাণে বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহ তা’লার উপর, তাঁর ফেরেশতাগনের উপর, আসমানী কিতাবসমূহের উপর, আল্লাহ তা’লার নবী-রসূলগণের উপর, কিয়ামত দিবসের উপর এবং তাকদীরের ভাল-মন্দ সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হওয়ার উপর। (বুখারী হাদীস নং-৫০ ও মুসলিম শরিফ, হাদীস নং-১)

উল্লেখিত আয়াত ও অতি প্রসিদ্ধ হাদীসটি ‘ইমানে মুফাসসাল’-এর ভিত্তি।

ঈমানে মুফাসসালের মাধ্যমে এ কথাগুলোরই স্বীকৃতি জানানো হয় এবং মনে প্রাণে বদ্ধমূল বিশ্বাসের ঘোষণা করা হয় যে, আমি ঈমান আনলাম বা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করলাম-

১. আল্লাহ তা‘আলাকে,
২. তাঁর ফেরেশতাগণকে,
৩. তাঁর প্রেরিত সকল আসমানী কিতাবসমূহকে,
৪. তাঁর প্রেরিত সকল নবী-রসূলকে,
৫. কিয়ামত দিবসকে অর্থাৎ, সমস্ত বিশ্বজগত একদিন শেষ হবে, তাও বিশ্বাস করি,
৬. তাকদীরকে বিশ্বাস করি অর্থাৎ,জগতে ভাল-মন্দ যা কিছু হয়, সবই আল্লাহ তা’আর সৃষ্টি, তারই পক্ষ হতে নির্ধারিত এবং
৭. মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন পুনর্বার জীবিত হতে হবে, তাও অটলভাবে বিশ্বাস করি।”

উল্লেখিত ৭টি বিষয়ের মধ্যে ৭নং বিষয় ৫নং বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রশাখা। তবে তার বিশেষ গুরুত্বের কারণে তাকে ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো ঈমানের আরকান বা মূলভিত্তি। ঈমানের এ বিষয়গুলো মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা জরুরী। ঈমানের এ বুনিয়াদী বিষয়গুলো সামনে ব্যাখ্যা সহকারে পেশ করা হচ্ছে।   বিস্তারিত..
Blogger দ্বারা পরিচালিত.