Header Ads

গণতন্ত্রের কুফরী দিকসমূহ মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন- وَإِنْ تُطِعْ أَكْثَرَ مَنْ فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ “আপনি যদি পৃথিবীর অধিকাংশের কথা মেনে চলেন, তাহলে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দিবে। তারা শুধু অলীক-কল্পনার অনুসরণ করে সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক বলে থাকে” [সূত্র: সূরা আন‘আম, আয়াত-১১৬] কুরআন কারীমে এমন অনেক গুলো আয়াত রয়েছে, যে সব দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ইসলাম প্রচলিত পশ্চিমা গণতন্ত্র সমর্থন করে না। এর সামান্য পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছে পাশ্চাত্য গণতন্ত্র ও ইসলাম সম্পূর্ণ একে অপরের বিপরীত ।গণতন্ত্র স্বীকার করলে, কুরআনকে পূর্ণভাবে মানা সম্ভব নয়। আর কুরআনকে পূর্ণভাবে মানলে প্রচলিত গণতন্ত্র স্বীকার করার কোন অবকাশ নেই। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি যে মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে সর্বযুগে জ্ঞানী, গুণী, বিদ্বান ও বিচক্ষণ লোকের সংখ্যা কম রেখেছেন। নির্বোধ, অবুঝ ও কম বুদ্ধির লোক বেশী রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন যে, “অধিকাংশ মানুষই মূর্খ”। [সূত্র: সূরা আন‘আম, আয়াত-১১২] অথচ প্রচলিত গণতন্ত্রে জ্ঞানী-গুণীর বুদ্ধি পরামর্শের আলাদা কোন মূল্যায়ন করা হয় না। একজন বিবেকহীন মানুষের মতামতের যে মূল্য, একজন জগদ্বিখ্যাত জ্ঞানী ব্যক্তির অভিমতেরও সেই মূল্য। যারা বড় বড় পোস্ট ও পদের ব্যাপারে কোন খবরই রাখে না, তাদেরকে সেই ব্যাপারে রায় দিতে বলা হয়। অথচ তাদের মাঝে যোগ্যতম ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার মত বিবেক-বিবেচনা বিদ্যমান নেই। সুতরাং, তারা কখনো ভাল ও যোগ্যতম লোক নির্বাচন করতে পারে না। ফলে তাদের রায়ের ভিত্তিতে অযোগ্য লোকই ক্ষমতায় যাওয়ার বেশী সম্ভাবনা এবং এতে কোন প্রতিষ্ঠান বা দেশ যে সুন্দরভাবে চলতে পারে না, এ কথা দলীল-প্রমাণের মাধ্যমে বুঝাতে চেষ্টা করাও বোকামী। গণতন্ত্রের ফর্মুলায় বলা হয়েছে যে, “জনগণেরই দ্বারা জনগণেরই জন্য নির্বাচিত।” এ কথাটির মারাত্মক পরিণতি এই যে, গণতন্ত্রের এ ফর্মুলা দ্বারা গণতন্ত্রীগণ বলে থাকেন, জনগণ ক্ষমতার উৎস। অথচ কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে, “সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।” [সূত্র:সূরা বাকারা, ১৬৫] সুতরাং, কোন মু‘মিন কুরআনের বিরুদ্ধে কোন মতবাদ গ্রহণ করতে পারে না। তাছাড়া এ পদ্ধতির মাধ্যমে যাদেরকে ক্ষমতায় বসানো হয়, তাদের এমন একচ্ছত্র ক্ষমতার মালিক বানানো হয় যে, তারা যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। এমনকি আল্লাহ তা‘আলার কুরআনী বিধানের বিরুদ্ধেও আইন পাশ করতে পারে। তারা যেন সকল প্রকার শরয়ী জওয়াবদিহিতারও ঊর্ধ্বে। যেমন, শরী‘আতে চোরকে হাত কাটার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, মদখোরকে জনসমক্ষে ৮০ ঘা বেত লাগানোর হুকুম দেয়া হয়েছে, অবিবাহিত যিনাকারীকে ১০০ ঘা বেত্রাঘাত এবং বিবাহিত যিনাকারীকে পাথর মেরে হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মুসলিম দেশের পার্লামেন্টের সদস্যরা এর কোনটাই বাস্তবায়ন না করে মনগড়াভাবে এর বিরুদ্ধে আইন পাশ করছে। উপরন্তু তারা কুরআনের বিধানকে সেকেলে ও বর্বর বলে আখ্যায়িত করছে। অথচ কুরআনে কারীমের নির্দেশ অনুযায়ী, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বিধান দেয়ার অধিকার নেই। [সূত্র: সূরা ইউসুফঃ ৪০] তাই কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিধান দেয়ার ব্যাপারে ক্ষমতা প্রদান করলে, তাকে বিধানদাতা আল্লাহর সাথে শরীক করা হয়। যেমন : হাদীসে এসেছে, ইয়াহুদী, খৃষ্টানদের ব্যাপারে আয়াত নাযিল হয় যে, “তারা তাদের পাদ্রীদেরকে ইলাহ বা মা‘বুদ বানিয়ে নিয়েছে।” [সূত্র: সূরা তাওবা,৩১] এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তারা তাদের পাদ্রীদেরকে ইলাহ বা মা‘বুদ বানিয়ে নিয়েছে-এর অর্থ এই নয় যে, তারা পাদ্রীদের ইবাদত বা পূজা করতো, বরং তাদের পাদ্রীরা তাদের কিতাবের কতিপয় হালাল বস্তুকে হারাম এবং হারাম বস্তুকে হালাল ঘোষণা করেছিল, আর তারা সেগুলো মেনে নিয়েছিল। এটাকেই বলা হয়েছে, “তারা তাদের পাদ্রীদেরকে খোদা বানিয়ে নিয়েছে।” [সূত্র: তিরমিযী, ২:১৪০/দুররে মনসূর, ৩:২৩০/তাফসীরে মাযহারী, ৪:১৯৪] এ হাদীস দ্বারা স্পষ্টরূপে বুঝা গেল যে, কেউ যদি আল্লাহর কিতাবের বিরুদ্ধে অন্য আইন পাশ করে বা কোন কানুন ঘোষণা করে এবং জনগণ তা মেনে নেয়, তাহলে বস্তুত এর দ্বারা বান্দাকে ইলাহ বানানো হয় এবং বিধানদাতা যেহেতু একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা; সুতরাং, বান্দাকে বিধানদাতা মানলে, তাকে খোদার আসনে বসানো হয় এবং আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ গুণের মধ্যে অন্যকে শরীক করা হয়, যা শিরকের মধ্যে পরিগণিত। আর তা মহাপাপ এবং নিজের ঈমানের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া প্রচলিত গণতন্ত্রে বিতর্কিত কোন বিষয়ের সমাধানের জন্য পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয় বা জনগণের মধ্যে নির্বাচন দেয়া হয়, এ সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে কুরআন-হাদীসে কি সিদ্ধান্ত দেয়া আছে, তা ঘুণাক্ষরেও দেখা হয় না। অথচ আল্লাহ পাকের নির্দেশ হলো-কোন বিষয়ে মতানৈক্য হয়ে গেলে, বা ফায়সালা করাতে হলে, “তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন করো।” [সূত্র: সুরাহ নিসা-৫৯] গণতন্ত্রের কোন ঠিকাদারকে যদি বলা হয় যে, এ মতবাদ যখন এতই উত্তম; সুতরাং, তোমরা নিজেদের এলাকায় যেসব স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করো, তার দায়িত্বশীল কে কে হবেন এবং সেটা কিভাবে পরিচালিত হবে, এর জন্য কোন কমিটি বা পরিষদ গঠন না করে তার স্থলে এলাকার সকল শ্রেণীর লোকদেরকে ডেকে ভোট গ্রহণ কর, কমিটি গঠন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন দরকার নেই। তখনই তাদের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। তারা কখনো একথা মানবে না যে, পাবলিকের ভোটে এগুলো নির্ধারণ করা হোক; বরং তারা বলবে যে, মূর্খ লোকেরা এগুলো কি বুঝবে? তাহলে প্রশ্ন হয়, যে পদ্ধতি দ্বারা একজন হেড মাস্টার বা প্রিন্সিপাল নিযুক্ত করা যায় না, সে পদ্ধতি দ্বারা রাষ্ট্রপ্রধান বা নীতিনির্ধারক কিভাবে নির্বাচিত হতে পারে ? একটা দেশ কি প্রাইমারী স্কুল থেকেও ছোট বা কম গুরুত্ব রাখে? এ ধরনের বহু দিক দিয়ে প্রচলিত গণতন্ত্র কুরআনের সাথে সংঘর্ষশীল এবং সহীহ আকল ও বিবেকের পরিপন্থী। অপরদিকে শরী‘আত এমন সুন্দর বিধান দান করেছে, যার নজীর কিয়ামত পর্যন্ত কেউ পেশ করতে পারবে না। শরী‘আতের নির্দেশ হলো-দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম শ্রেণী ও ইসলামী বুদ্ধিজীবীগণের সমন্বয়ে একটি সর্বোচ্চ মজলিসে শুরা বা পরামর্শ পরিষদ থাকবে। যা স্থায়ী হবে, তার কোন সদস্যের বিয়োগ ঘটলে, পরামর্শের ভিত্তিতে তার স্থলে যোগ্য লোক মনোনীত করা হবে। এ মজলিসে শূরা-ই আমীরুল মু‘মিনীন (প্রেসিডেন্ট) থেকে আরম্ভ করে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের জিম্মাদার (মন্ত্রী) মনোনীত করবেন। এমনকি বিভাগীয় প্রধান, জেলা প্রধান, থানা প্রধানদেরকেও তারা মনোনীত করবেন। তখন প্রচলিত ধোঁকা ও ফাঁকিবাজির নির্বাচনের কোন দরকারই পড়বে না। কোন প্রার্থীর চরিত্র ফুলের মত পবিত্র প্রমাণ করতে পাঁচ দশ লাখ টাকা খরচ করতে হবে না। এত টাকা খরচ করে যদি কেউ পাশ করেও, তাহলে সে জনগণের খিদমতের চেয়ে তার টাকা উসূল করার ফিকিরে বেশি ব্যস্ত থাকবে। শরী‘আতে টাকা করজ করে পদ হাসিল করা তো দূরের কথা, যে ব্যক্তি কোন পদের প্রার্থনা করবে, শরী‘আতের নির্দেশ হচ্ছে-তাকে সে পদ দেয়া হবে না। বরং যোগ্যতম ব্যক্তিকে অনেক সময় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন দায়িত্বে বসানো হবে। এর দ্বারা দেশের কোটি কোটি টাকার অপচয় বন্ধ হবে এবং নির্বাচন উপলক্ষে যে শত শত লোকের জান চলে যায়, শত শত মহিলা বিধবা হয়, হাজার হাজার বাচ্চা ইয়াতিম হয়, এসব একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। এমনিভাবে আরো অনেক অনিষ্টতা থেকে দেশ হিফাজতে থাকবে। উল্লেখিত মজলিসে শূরা একটি আইন পরিষদ গঠন করে দিবে। আইন পরিষদের সদস্যরা নিজে কোন আইন প্রণয়ন করবে না, বরং প্রত্যেক বিষয়ের সমাধান কুরআন-সুন্নাহ থেকে খুঁজে খুঁজে বের করবে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। [সূত্র: সূরা মায়িদাঃ ৩] সুতরাং, মুসলমানদের জন্য নতুনভাবে আইন প্রণয়ন করার কোন প্রয়োজন নেই। শুধু কুরআন-সুন্নাহ থেকে খুঁজে বের করবে-এতটুকুর প্রয়োজন অবশিষ্ট আছে। তাও সব বিষয়ে নয়, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খুলাফায়ে রাশিদীনের রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামী রাষ্ট্রনীতির মৌলিক সকল বিষয় এসে গেছে। সমকালীন যুগের কিছু নতুন সমস্যাবলী কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে থেকে খুঁজে বের করতে হয়। কুরআন সুন্নাহ এমন কিতাব যে, এর আলোকে কিয়ামত পর্যন্ত যত নতুন জরুরত বা সমস্যা উদ্ভূত হবে, তার সমাধান বের করা সম্ভব। কেননা, কুরআন তো স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেছেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে, সবই তো তাঁর ইলমে আছে। উক্ত মজলিসে শুরা প্রশাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ-এর জিম্মাদারও মনোনীত করে দিবেন। তারা আইন পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত খোদায়ী কানুন দেশের সর্বত্র জারী করবেন এবং সকল মামলা মুকাদ্দমা, আইন-আদালত উক্ত কানুনের ভিত্তিতে পরিচালনা করবেন, সমাধান দিবেন। সারকথা, মজলিসে শূরার মাধ্যমেই রাষ্ট্রপ্রধান এসব কাজ আনজাম দিবেন। তাছাড়া যে কোন জটিল সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রপ্রধান একা করবেন না; বরং মজলিশে শূরার পরামর্শ অনুযায়ী করবেন এবং উক্ত মজলিসে শূরা যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পরিষদ; সুতরাং, রাষ্ট্রপ্রধান বা অন্য কোন বিভাগীয় প্রধান যদি দায়িত্ব পালনে অপারগ হন বা খিয়ানত করেন অথবা ইনতিকাল করেন, তাহলে মজলিসে শূরা তার স্থলে অন্য লোক মনোনীত করবেন। এ হলো ইসলামী হুকুমত পরিচালনার অতি সংক্ষিপ্ত রূপরেখা। এটা এজন্য পেশ করা হলো, যাতে করে প্রচলিত গণতন্ত্র ও ইসলামী বিধানের পার্থক্য বুঝতে কিছুটা সহায়ক হয়। প্রচলিত গণতন্ত্রকে সংক্ষেপে বুঝার জন্য এটাকে বাদশাহ আকবরের ভ্রান্ত মতবাদ তথা দ্বীনে ইলাহির সাথে তুলনা করা চলে। কারণ, আকবরের দ্বীনে ইলাহির ন্যায় এটাও একটা বাতিল মতবাদ বা বাতিল ধর্ম, যা ইয়াহুদী-খৃষ্টানদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তৈরী হয়েছে। দ্বীনে ইলাহি দ্বারা বাদশাহ আকবর হিন্দু-মুসলমানদের এক করতে চেয়েছিল, আর গণতন্ত্রের এ বাতিল ধর্ম দ্বারা খৃষ্টানরা সমগ্র দুনিয়ার মানুষকে এক করে তাদের তাবেদার বানাতে চায়। এ বাতিল ধর্মের নীতি-বিধান হলো গণতান্ত্রিক ফর্মুলা এবং এ ধর্মের স্বঘোষিত দেবতা হলো এর ধারক বাহকরা। ইয়াহুদী-খৃষ্টানরা এ বাতিল ধর্মকে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে কায়িম করতে সক্ষম হয়েছে। মুসলমানগণ দ্বীনী ইলমের অভাবে উন্নত মতবাদ মনে করে এবং ইয়াহুদী-খৃষ্টানদের সহায়তা লাভের উদ্দেশ্যে ইসলামী রাষ্ট্রনীতি ও কুরআনী বিধানকে বাদ দিয়ে এ বাতিল ও ভ্রান্ত মতবাদ গ্রহণ করেছে। বর্তমান পৃথিবীর অবস্থা এরূপ যে, যেখানেই গণতন্ত্রের দেবতাদের ধারণায় গণতন্ত্র লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তারা বাহিনী পাঠাচ্ছে। তবে কোথাও গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী দল অগ্রসর হলে, দেবতারা সেটাকে প্রত্যাখ্যান করছে এবং তাকে তাদের ফর্মুলা অনুযায়ী অগ্রহণযোগ্য বলছে। তার ধ্বংস সাধনে দেশের সেনাবাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের অগ্রযাত্রা নষ্ট করে দিচ্ছে। এভাবে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তারা সারা বিশ্বের উপর ছুড়ি ঘুরাচ্ছে এবং প্রভুত্ব করছে। অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানগণ ফির‘আউনের যমানার ন্যায় গণতন্ত্রের দেবতাদেরকে বড় খোদা হিসেবে মেনে নিয়েছে। ঐ সব দেবতারা মুসলমানদের থেকে চাঁদা নিয়ে জাতিসংঘের নামে মুনাফেকী করে মুসলিম নিধনে তৎপর আছে। এমন কি তারা এ ঘোষণা দিতেও দ্বিধা করছে না যে, দু’হাজার সাল নাগাদ ইসলাম ধর্মই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা। অপরদিকে অর্ধশতেরও বেশী মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানগণ নীরব, নির্বিকার। এত কিছুর পরও তারা গণতন্ত্রের দেবতাদেরকে মুসলমানদের খায়েরখা বলে বিশ্বাস করছে। তাদের নিদ্রা কোন ভাবেই ভাংছে না। সমগ্র বিশ্বের এই একই চিত্র। সব জায়গায় মুসলমান মার খাচ্ছে। কাফির-মুশরিক মার দিচ্ছে। আর গণতন্ত্রের ঐসব দেবতাগণ দু’চারটা ফাঁকা বুলি ছেড়ে মুসলমানদের সান্ত্বনা দিচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন জাতীয়তাবাদের নামে তারা মুসলমানদেরকে শত শত দলে বিভক্ত করে রেখেছে। অথচ এসব জাতীয়তাবাদ ইসলাম স্বীকার করে না। ইসলামের ফায়সালা হচ্ছে, রং বর্ণ, ভাষা, এলাকা ও ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে মুসলমানদেরকে ভাগ করা বা খণ্ড খণ্ড করা কুফরী কাজ এবং জাহিলিয়্যাতের কু-প্রথা। ইসলামের ঘোষণা, মুসলমান পৃথিবীর যে প্রান্তেই বাস করুক না কেন, সকলেই ভাই ভাই, সকলেই এক জাতি। চাই সে রং, বর্ণ, ভাষা ও ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে যাই হোক না কেন। [সূত্র: সূরা হুজুরাত, ১০/ মা‘আরিফুল কুরআন ১: ৬৩/৮: ৪৬৩] কিন্তু মুসলমানগণ দ্বীনী ইলমের অভাবে এ সবই হজম করে যাচ্ছে। এমনকি ধর্ম নিরপেক্ষতাকে স্বীকার করতেও আজ মুসলমানরা দ্বিধা বোধ করছে না। অথচ কোন মুসলমান যদি দ্বীন-ঈমান নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে চায়, তাহলে সে এক মুহূর্তের জন্যও ধর্ম নিরপেক্ষ হতে পারে না। বরং তাকে সর্বক্ষণ ইসলাম ধর্মের পক্ষে থাকতে হবে। ইসলাম ধর্মকে কায়িম করার জন্য জান-মাল, ইজ্জত-আব্রু সব কিছু কুরবানী করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। একমাত্র ইসলাম ব্যতীত সে অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদকে স্বীকৃত দিতে পারবে না। বিজাতীয় কোন ব্যক্তি বা দলের সাথে সে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক রাখতে পারবে না বা তাদের সহযোগিতা করতে পারবে না। কারণ, সে ঈমানের দাবীদার। আর ঈমানের অঙ্গ হলো-আল্লাহর জন্য মুসলমানদের মুহাব্বত করা এবং আল্লাহর জন্য আল্লাহর দুশমনের সাথে দুশমনী রাখা। [সূত্র: বুখারী শরীফ, ১:৬]। সারকথা, বর্তমান পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমান বুঝে বা না বুঝে, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় গণতন্ত্র নামক ইয়াহুদী-খৃষ্টানদের বাতিল মতবাদের বেড়াজালে আটকে পড়েছে। এ মুহূর্তে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, আমরা মনে প্রাণে পাশ্চাত্য গণতন্ত্রকে ঘৃণা করবো। কোনক্রমেই এটাকে সমর্থন করবো না। কারণ, এটা সরাসরি ইসলামের বিরুদ্ধাচরণ। অনেকে গণতন্ত্র কায়িমের জন্য বা পুনরুদ্ধারের জন্য জিহাদ ঘোষণা করে। এটা তাদের মূর্খতা। কারণ, কুফরী মতবাদ কায়িম করার জন্য জিহাদ করার কোন প্রশ্নই উঠে না। আমরা জনগণের ঈমানের হিফাযতের লক্ষ্যে গণতন্ত্র ও বিভিন্ন জাতীয়তাবাদের অনিষ্টতা থেকে লোকদের সচেতন করবো। দাওয়াত, তা‘লীম ও খিদমতের মাধ্যমে দেশে ইসলামী পরিবেশ কায়িম করবো এবং আল্লাহ তা‘আলা যখনই সুযোগ দিবেন, তখনই এসব কুফরী মতবাদ দূরে নিক্ষেপ করে কুরআনী বিধান জারি করবো। https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islami_jindegi
Blogger দ্বারা পরিচালিত.