কুফর, শিরক ও বিদ‘আতের আলোচনা...!!!
কুফর এর সংজ্ঞা
আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যত বিধি-বিধান হাসিল করেছেন এবং অকাট্য দলীল দ্বারা যা প্রমাণিত হয়েছে তার কোন বিষয় সম্বন্ধে অন্তরে সন্দেহ পোষণ করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা কুফরী কাজ। (ফাতাওয়ায়ে শামী-৪, পৃষ্ঠা-২২৩)
উল্লেখিত কাজের দ্বারা ঈমান নষ্ট হয়ে গেলে তার পিছনের জীবনের সকল ইবাদাত বন্দেগী ও আমল নষ্ট হয়ে যায়। এবং বিবাহিত হলে তার বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। আল্লাহ না করুন এ অবস্থা কারো হলে তার জন্য জরুরী হল, নতুনভাবে কালেমা তাওবা ইস্তেগফার করে পুনরায় ঈমান আনয়ন করে নেয়া এবং বিবাহিত হলে বিবাহও দুহরায়ে নেয়া।
কুফরের প্রকারভেদ
(১) কুফরে ইনকার: অন্তর এবং যবান উভয়ের মাধ্যমে কোন দীনী বিষয়কে অস্বীকার করা। যেমন- মক্কার কাফের সম্প্রদায়।
(২) কুফরে জুহুদ: অন্তরে দীনকে বিশ্বাস রাখা কিন্তু মুখে অস্বীকার করা। যেমন- মদীনার ইয়াহুদ সম্প্রদায়।
(৩) কুফরে ইনাদ: অন্তরে দীনকে বিশ্বাস করে এবং মুখেও স্বীকার করে, কিন্তু ইসলামের হুকুম আহকামকে মান্য করে না, অন্যান্য দীন বাতিল হয়ে গিয়েছে তা বিশ্বাস করে না। যেমন- আদমশুমারীর অনেক নামধারী মুসলমান যারা কখনো সহীহ দীনী পরিবেশে আসে না।
(৪) কুফরে যানদাকাহ: বাহ্যিকভাবে দীনের সবকিছু স্বীকার করে, কোন বিষয় অস্বীকার করে না কিন্তু দীনের কোন বিষয়ে এমন ব্যাখ্যা প্রদান করে যা উম্মতের ইজমা পরিপন্থী।
যেমন- কাদীয়ানীগণ খতমে নবুওয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে তাদের ভণ্ড নবীকে প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালায়। এমনভাবে কাফেরদেরও বিভিন্ন প্রকার রয়েছে।
কাফেরদের প্রকারভেদ
(১) মুনাফেক: যবানে ইসলাম কিন্তু দিলে কুফর।
(২) মুরতাদ: ইসলাম গ্রহণের পর তা পরিত্যাগ করা।
(৩) মুশরিক: একাধিক উপাস্যে বিশ্বাসী।
(৪) কিতাবী: অন্যান্য আসমানী কিতাবের বিশ্বাসী ও অনুসারী।
(৫) দাহরিয়া: (বস্তুবাদী) যমানা ও প্রকৃতিকে জগতের সৃষ্টিকর্তা হিসাবে বিশ্বাসী এবং পৃথিবীকে অক্ষয় ও চিরস্থায়ী বিশ্বাস করে।
(৬) মুআত্তেল: (নাস্তিক) সৃষ্টিকর্তা বলতেই অস্বীকার করে।
(৭) যিনদীক: মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও এমন আক্বীদা পোষণকারী যা সর্বসম্মতিক্রমে কুফর। (ফাতাওয়ায়ে শামী-২২৬ খণ্ড-৪)
কিছু কুফরী আক্বীদা ও কাজ
কিছু বিদ‘আতের আলোচনা
আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যত বিধি-বিধান হাসিল করেছেন এবং অকাট্য দলীল দ্বারা যা প্রমাণিত হয়েছে তার কোন বিষয় সম্বন্ধে অন্তরে সন্দেহ পোষণ করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা কুফরী কাজ। (ফাতাওয়ায়ে শামী-৪, পৃষ্ঠা-২২৩)
উল্লেখিত কাজের দ্বারা ঈমান নষ্ট হয়ে গেলে তার পিছনের জীবনের সকল ইবাদাত বন্দেগী ও আমল নষ্ট হয়ে যায়। এবং বিবাহিত হলে তার বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। আল্লাহ না করুন এ অবস্থা কারো হলে তার জন্য জরুরী হল, নতুনভাবে কালেমা তাওবা ইস্তেগফার করে পুনরায় ঈমান আনয়ন করে নেয়া এবং বিবাহিত হলে বিবাহও দুহরায়ে নেয়া।
কুফরের প্রকারভেদ
(১) কুফরে ইনকার: অন্তর এবং যবান উভয়ের মাধ্যমে কোন দীনী বিষয়কে অস্বীকার করা। যেমন- মক্কার কাফের সম্প্রদায়।
(২) কুফরে জুহুদ: অন্তরে দীনকে বিশ্বাস রাখা কিন্তু মুখে অস্বীকার করা। যেমন- মদীনার ইয়াহুদ সম্প্রদায়।
(৩) কুফরে ইনাদ: অন্তরে দীনকে বিশ্বাস করে এবং মুখেও স্বীকার করে, কিন্তু ইসলামের হুকুম আহকামকে মান্য করে না, অন্যান্য দীন বাতিল হয়ে গিয়েছে তা বিশ্বাস করে না। যেমন- আদমশুমারীর অনেক নামধারী মুসলমান যারা কখনো সহীহ দীনী পরিবেশে আসে না।
(৪) কুফরে যানদাকাহ: বাহ্যিকভাবে দীনের সবকিছু স্বীকার করে, কোন বিষয় অস্বীকার করে না কিন্তু দীনের কোন বিষয়ে এমন ব্যাখ্যা প্রদান করে যা উম্মতের ইজমা পরিপন্থী।
যেমন- কাদীয়ানীগণ খতমে নবুওয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে তাদের ভণ্ড নবীকে প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালায়। এমনভাবে কাফেরদেরও বিভিন্ন প্রকার রয়েছে।
কাফেরদের প্রকারভেদ
(১) মুনাফেক: যবানে ইসলাম কিন্তু দিলে কুফর।
(২) মুরতাদ: ইসলাম গ্রহণের পর তা পরিত্যাগ করা।
(৩) মুশরিক: একাধিক উপাস্যে বিশ্বাসী।
(৪) কিতাবী: অন্যান্য আসমানী কিতাবের বিশ্বাসী ও অনুসারী।
(৫) দাহরিয়া: (বস্তুবাদী) যমানা ও প্রকৃতিকে জগতের সৃষ্টিকর্তা হিসাবে বিশ্বাসী এবং পৃথিবীকে অক্ষয় ও চিরস্থায়ী বিশ্বাস করে।
(৬) মুআত্তেল: (নাস্তিক) সৃষ্টিকর্তা বলতেই অস্বীকার করে।
(৭) যিনদীক: মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও এমন আক্বীদা পোষণকারী যা সর্বসম্মতিক্রমে কুফর। (ফাতাওয়ায়ে শামী-২২৬ খণ্ড-৪)
কিছু কুফরী আক্বীদা ও কাজ
যার কোনটা দ্বারা কাফের হয়ে যায় আর কোনটা দ্বারা কাফের হয় না কিন্তু মারাত্মক গোনাহগার হয়।
(১) কোন মুসলমানকে কাফের বলে বিশ্বাস করা। (ফাতাওয়ায়ে শামী-খণ্ড-৪ পৃষ্ঠা-৬৯)
(২) আল্লাহর শানে এমন আক্বীদা পোষণ করা যা মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন, সন্তানাদি হওয়া ইত্যাদি। (সূরা ইখলাস)
(৩) হুজুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে শেষনবী বিশ্বাস না করা বা এর অপব্যাখ্যা করা। (শরহুল আকায়িদ-১২৯-১৩০)
(৪) দীনের কোন বিষয়কে হেয় ও তুচ্ছ জ্ঞান করা, ঠাট্টা করা ইত্যাদি। (ফাতাওয়ায়ে শামী-খণ্ড-৫ পৃষ্ঠা-৪৭৪)
(৫) আহলে ইলম তথা উলামায়ে কেরামকে হেয় ও তুচ্ছ জ্ঞান করা।
(৬) দীনের অকাট্য ও সর্বসম্মত বিষয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা করা। (ইকফারুল মুলহিদীন পৃষ্ঠা-৭৩)
(৭) উম্মতের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তকে অস্বীকার করা। (শামী খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২২৩)
(৮) আম্বিয়ায়ে কেরামের মধ্যে কাউকে গালী দেওয়া বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। (শামী খণ্ড-২৩১)
(৯) সাহাবায়ে কেরামকে গালী দেওয়া বিশেষ করে শাইখাইন তথা হযরত আবূ বকর রাযি. ও হযরত উমর রাযি. কে গালী দেওয়া। (শামী-৪খন্ড-২৩৬,২৩৭)
(১০) আয়েশা রাযি. এর প্রতি অপবাদ দেওয়া। (শামী ৪ খণ্ড-১৩৭)
(১১) কোন অকাট্য হারামকে হালাল বলা।
(১২) কাফেরদের শিআরকে (নিদর্শনকে) সম্মান করা। (আদদুররুল মুখতার খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৭৫৪)
(১৩) হাসি, মজাক বা ঠাট্টা করে হলেও কালেমায়ে কুফর মুখে উচ্চারণ করা। (ইকফারু মুরহিদীন-২২৫)
(১৪) গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি তন্ত্রে বিশ্বাসী হওয়া।
এ
জাতীয় আরো অনেক এমন কথা বা কাজ রয়েছে যার কোনটা দ্বারা মানুষ কাফের হয়ে
যায়। আবার কোনটা দ্বারা কাফের তো হয় না কিন্তু মারাত্মক গুনাহগার হয়।
সুতরাং এগুলো থেকে বেঁচে থাকা জরুরী।
কতিপয় শিরক এর আলোচনা
নিম্ন লিখিত কাজগুলো শিরক, এসব হতে দূরে থাকা কর্তব্যঃ
(১) কোন পীর বুযুর্গ এমনকি কোন নবী সম্বন্ধে এ রকম আক্বীদা রাখা যে, তিনি সব সময় আমাদের সব অবস্থা জানেন।
(২) জ্যোতিষী, গণকঠাকুরদের নিকট অদৃষ্টের কথা জিজ্ঞাস করা।
(৩) কোন পীর বুযুর্গের কবরের নিকট আওলাদ বা অন্য কোন উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে প্রার্থনা করা।
(৪) পীর বা কবরকে সিজদা করা।
(৫) কোন পীর বুযুর্গের নামে শিরনী সদকা বা মান্নত মানা।
(৬) কোন পীর-বুযুর্গের দরগাহ বা কবরের চতুর্দিক দিয়ে তওয়াফ করা।
(৭) কোন পীর বুযুর্গ বা অন্য কারো নামে জানোয়ার যবেহ করা বা কারো দোহাই দেয়া।
(৮) কোন পীর বুযুর্গ বা অন্য কারো নামে ছেলের নাক, কান ছিদ্র করা, আংটি পরানো, চুল রাখা, টিকা রাখা।
(৯) কোন জিনিসের বা ব্যারাম-পীড়ার (রোগের) ছুত লাগে বলে বিশ্বাস করা।
(১০)
ভালো মন্দ বার বা তারিখ জিজ্ঞাসা করা। যেমন, অনেকে জিজ্ঞাসা করে এই বারে
বিবাহ শুভ কিনা? কোন্ দিনে নতুন ঘরে যেতে হয়? রোববারে বাঁশ কাটা যায় কিনা?
ইত্যাদি।
(১১) পীরের বাড়ি বা কোন বুযুর্গের দরগাহ বা তীর্থকে কাবা শরীফের মত আদব বা তাযিম করা।
(১২) কোন জিনিস হতে কুলক্ষণ ধরা বা কুযাত্রা মনে করা। যেমন- যাত্রামুখে কেউ হাঁচি দিলে অনেকে সেটাকে কুযাত্রা মনে করে থাকে।
(১৩) কোন দিন বা মাসকে অশুভ মনে করা।
(১৪) কোন বুযুর্গের নাম অযিফার মত জপ করা।
(১৫)
কারো নামের কসম খাওয়া বা যিকির করা। কাউকে পরম পূজনীয় সম্বোধন করে লেখা।
কষ্ট না করলে কেষ্ট পাওয়া যায় না বলা। জয়কালী নেগাহবান, ইত্যাদি বলা।
(১৬) ছবি, ফটো বা মূর্তি রাখা বিশেষ করে কোন বুযুর্গের ফটো তাযীমের জন্য রাখা।
কিছু বিদ‘আতের আলোচনা
(১) কোন বুযুর্গের মাযারে ধুমধামের সাথে ’উরস’ করা, মেলা বসানো বাতি জ্বালানো।
(২) মেয়ে লোকের বিভিন্ন দরগায় যাওয়া।
(৩) কবরের উপর চাদর,আগরবাতি,মোমবাতি ও ফল দেওয়া।
(৪) কোন বুযুর্গকে সন্তুষ্ট করার জন্যে শরী‘আতের সীমারেখার বেশি তাযীম করা।
(৫) কবরে চুমো খাওয়া।
(৬)
কোন কোন অজ্ঞ লেখক আজমীর শরীফ, বাজেবোস্তান, পীরানে কার্লিয়ার ইত্যাদিকে
মুসলমানদের তীর্থস্থান বলে উল্লেখ করেছে, তা দেখে তীর্থ গমনের ন্যায় সেসব
স্থানে যাওয়া।
(৭) কবরে গম্বুজ বানানো।