Header Ads

দুরূদ সম্পর্কিত মাসাইল

দুরূদ সম্পর্কিত মাসাইল

 * কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের কারণে সারা জীবনে কমপক্ষে এক বার দুরূদ পাঠ করা ফরয। (দুররে মুখতার, ১:৫১৪-৫১৮) * যদি একই মজলিসে কয়েকবার নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম আলোচিত হয়, তাহলে প্রথমবার সকলের উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব। পরবর্তী প্রত্যেকবার দুরূদ শরীফ পাঠ করা নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী সকলের জন্য মুস্তাহাব। অবশ্য ইমাম ত্বহাবী রহ. পরবর্তীতে প্রত্যেকবার দুরূদ পাঠকে প্রত্যেকের জন্য ওয়াজিব বলেছেন। (দুররে মুখতার, ১ : ৫১৬) উল্লেখ্য, কেউ যদি নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক একই মজলিসে বারবার লিখেন, তাহলে তার জন্য হুকুমও অনুরূপ অর্থাৎ প্রথমবার দুরূদ লেখা ওয়াজিব এবং পরবর্তী-বার মুস্তাহাব। (দুররে মুখতার, ১ : ৫১৬) দ্রষ্টব্য- হযরত মুহাদ্দিসীনে কিরাম হাদীসের কিতাবে সবচেয়ে বেশি নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক লিখেছেন, কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকবার দুরূদ লিখতে কার্পণ্য করেন নাই। আল্লাহ তা‘আলা সকলকে তাওফীক দান করুন। (দুররে মুখতার, ১:৫১৬) * বিনা উযূতে, এমনকি হাটতে হাটতেও নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দুরূদ শরীফ পড়া যায়। * জুমু‘আ বা ঈদের খুতবার মধ্যে নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক আসলে অন্তরে দুরূদ পড়বে কিন্তু মুখে উচ্চারণ করবে না। * দুররে মুখতার কিতাবে আছে যে, বরং দুনিয়াবী কোন উদ্দেশ্য সামনে রেখে, এমন স্থানে দুরূদ পড়ার রসম বানানো বা দুরূদ পড়ার জন্য লোকদের দাওয়াত দেয়া যেটা দুরূদ পড়ার কোন স্থান নয়, তা সম্পূর্ণ নিষেধ। যেমন, নতুন দোকান খোলার সময় বা নতুন বাড়ী করার পর ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে দু’রাকা‘আত সালাতুস শোকর পড়ে নেয়া যথেষ্ট। উল্লেখ্য দুরূদ পড়ার স্থানের বর্ণনা সামনে আসছে। (দুররে মুখতার,১:৫১৮/আল-আশবাহ ওয়ান্নাযায়ির, ৫৩) * দুররে মুখতার কিতাবে আরো উল্লেখ আছে, দুরূদ শরীফ পড়ার নিয়ম হল, দিলে মুহাব্বতের সাথে ধীরস্থিরভাবে হালকা আওয়াজে চুপে চুপে পড়বে। দুরূদ পড়ার সময় ঢুলতে থাকা বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হেলাতে থাকা এবং উঁচু আওয়াজ করা নিষেধ। (দুররে মুখতার, ১:৫১৯) এর দ্বারা বুঝা যায় বিভিন্ন স্থানে দোকান-পাট বা বাড়ী-ঘর উদ্বোধন করার সময় বা নামাযের পরে সকলে মিলে উচ্চঃস্বরে দুরূদ পড়ার যে প্রথা চালু আছে, তা বর্জনীয়। কারণ, এগুলো দুরূদ পাঠের স্থান নয় এবং এভাবে দুরূদ পাঠের অনুমতিও নেই। দুঃখজনক কথা হল, প্রথাগত যে দুরূদ পড়া হয়, তার অধিকাংশই মনগড়া দুরূদ, কোন হাদীসে তা প্রমাণিত নয়। নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর আমল দ্বারা সেসব দুরূদের শব্দগুলোর কোন প্রমাণ নেই। আরবী ব্যাকরণ অনুসারে সেসব দুরূদের বাক্যগুলোও সহীহ নয় এবং তার অর্থের মধ্যেও মারাত্মক ধরণের ভুল রয়েছে। যেমন, “ইয়া নবী সালামু আলাইকা, ইয়া রাসূল সালামু আলাইকা ইত্যাদি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সাধারণ লোকদের সম্বোধন করার ন্যায় এভাবে সম্বোধন করা চরম বেআদবী। (তাফসীরে কুরতুবী, ১২:৩২২) সুতরাং এ ধরনের বানোয়াট ভুল দুরূদ পরিত্যাগ করা কর্তব্য। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে দুরূদ পড়তে বাধ্য করা হয়। অথচ নামাযের মধ্যে সকলেই বসা অবস্থায় দুরূদ পড়ে থাকে। সুতরাং বসে দুরূদ পড়াই উত্তম। আরো মারাত্মক কথা হলো, অনেকে বিশ্বাস করে থাকে যে, তাদের মাহফিলে স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সশরীরে হাজির হয়ে থাকেন। এ জন্য তারা একটা চেয়ার খালি রাখে। তাদের এ বিশ্বাসের পক্ষে কুরআন-হাদীসে কোন দলীল-প্রমাণ নেই। বরং হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে যে, উম্মতের দুরূদসমূহ পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে পড়া হোক, তা ফেরেশতাদের মারফতে ঐ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবারে পেশ করা হয়। (নাসাঈ হাদীস নং-১২৮২) ফাতাওয়ার বিভিন্ন কিতাবে তাদের এ ভ্রান্ত আক্বীদাকে কুফুরী আক্বীদা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। (সূরা আনআম, আয়াত নং-৫৯/ সূরা নামাল, আয়াত নং-৬৫/ ফাতাওয়া কাযীখান, ১:৩৩৪/ ফাতাওয়া বাজাইয়া ৩:৩২৬/ আহসানুল ফাতাওয়া, ১:৩৪৮) হ্যাঁ, মদীনা শরীফে গিয়ে রওজা মুবারক সামনে রেখে “আসসালাতু ওয়াস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হয়হয়, ইয়া নবীয়াল্লাহ বলে সম্বোধন করাতে কোন অসুবিধা নাই। সুতরাং সকল মুসলমানের নিজের ঈমানের হেফাজত এবং আখিরাতের নাজাতের লক্ষ্যে সকল প্রকার জেদাজেদি ছেড়ে দিয়ে, সমস্ত কুফুরী আক্বীদা ত্যাগ করে সহীহ আক্বীদা পোষণ করা এবং ঈমানকে সহীহ ও মজবুত করার ফিকির করা এবং এর জন্য আল্লাহর রাস্তায় সময় ব্যয় করা নেহায়েত জরুরী ও অপরিহার্য কর্তব্য। https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islami_jindegi
Blogger দ্বারা পরিচালিত.